ঢাকা ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

আমাদের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে: রেলমন্ত্রী 

আমাদের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে: রেলমন্ত্রী 

স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে এবার চলল ট্রেন। মাওয়া থেকে ভাঙা পর্যন্ত ৪২ দশমিক ২০ কিলোমিটার রেলপথে মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। আনুষ্ঠানিকভাবে এই ট্রেনই প্রথমবারের মতো সেতু অতিক্রম করল।

এ সময় সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জন্য আজ একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন আগেই হয়েছে। কিন্তু পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ চালু না হওয়ায় একটা অপূর্ণতা ছিল। রেল সংযোগ উদ্বোধনে সেটাও পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে। ফলে আমাদের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে।

তিনি বলেন, এর ফলে আমাদের মোংলা ও পায়রা বন্দরের দূরত্ব কমে যাচ্ছে। কলকাতা থেকে ঢাকার যেই দূরত্ব সেটা কমে আসছে। কাজেই মালামাল পরিবহন থেকে শুরু করে যাত্রী পরিবহন সবকিছুতেই আমূল পরিবর্তন আসছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নুর ই আলম চৌধুরী লিটন, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, ইকবাল হোসেন অপু এমপি, সাবেক হুইপ সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এমপি, নাঈম রাজ্জাক এমপি, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন প্রমুখ।

এদিন দুপুর ১টা ১০ মিনিটে ফরিদপুরের ভাঙা রেলওয়ে স্টেশন থেকে ফিতা কেটে এর উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন। এরপর ১টা ২০ মিনিটে একটি গ্যাংকার (পরিদর্শন ট্রেন) ভাঙ্গা থেকে মাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে পৌঁছে বিকেল ৩টা পঁচিশ মিনিটে। সাত কোচ ও দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট বিশেষ ট্রেন প্রথমবারের মতো পদ্মা পাড়ি দেয়। ট্রেনটি আবার সেতু পার হয়ে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা জংশনে ফিরে যায়। তবে ২৯ মার্চ সেতুর ২৫ নম্বর খুঁটির কাছে বাকি থাকা ৭ মিটার রেলপথ নির্মাণ শেষ হওয়ার পর গত শুক্রবার ও শনিবার রেল ট্র্যাকটি মহড়া হিসেবে সেতুতে চলাচল করেছে বলে দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।

ট্রেনে রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের নিয়ে ভাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে মাওয়া অংশে পৌঁছায়।

জানা যায়, বর্তমানে রেলপথে ঢাকার সঙ্গে খুলনার দূরত্ব ৪৬০ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু দিয়ে নতুন রেলপথটি চালু হলে দূরত্ব কমবে ২১২ কিলোমিটার। তখন ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব হবে ১৬৯ কিলোমিটার। পাশাপাশি কুষ্টিয়া, দর্শনার সঙ্গেও কমবে দূরত্ব ও ভোগান্তি। অন্যদিকে ফরিদপুর, রাজবাড়ী রুটের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে নতুন পথে নতুন রেলযাত্রী তৈরি হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল জেলা দিয়ে যশোরের সঙ্গে রেল নেটওয়ার্ক যুক্ত হবে।

এ বিষয়ে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, পুরো ৪২ কিলোমিটার পথে গ্যাংকার চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই সেতু নির্মাণে প্রথমে যে পরিকল্পনা করা হয়, তাতে রেলওয়ে ট্রাক বসানোর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর রেল চালুর বিষয়টি যুক্ত করা হয়। সড়ক সেতুর নিচ দিয়ে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করায় ঢাকার সঙ্গে যশোর রেললাইন নির্মাণে আলাদা প্রকল্প নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। রেল সংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।

সেতু,রেলপথ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত